চীনের মহাপ্রাচীরের দৈর্ঘ্য কত?
মানবসৃষ্ট সবচেয়ে বড় স্থাপনা চীনের মহাপ্রাচীরের দৈর্ঘ্য কত, তা নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। দুর্গম ও পাহাড়ি এলাকা দিয়ে নদীর মতো বয়ে যাওয়া হাজার হাজার মাইল দীর্ঘ এ প্রাচীরের সঠিক মাপ বের করাটাও দুঃসাধ্য। তাই ইতিহাসের বিভিন্ন দলিল ঘেঁটে এ প্রাচীরের দৈর্ঘ্য অনুমান করা হতো। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী এ মহাপ্রাচীরের দৈর্ঘ্য পাঁচ হাজার কিলোমিটারের কাছাকাছি। কিন্ত- নতুন করে প্রাচীরটি পরিমাপের পর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ প্রাচীরের দৈর্ঘ্য পূর্বধারণার চেয়ে অনেক বেশি। তাঁরা দাবি করছেন, চীনের মহাপ্রাচীরের দৈর্ঘ্য আট হাজার ৮৫০ কিলোমিটার। প্রাচীরের দৈর্ঘ্যরে বিষয়ে এত বড় রকমের হেরফের অবিশ্বাস্য মনে হলেও এ দাবি করা বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাসযোগ্য। কারণ খোদ চীন সরকারের ভূমি জরিপ ও মানচিত্র বিভাগের বিশেষজ্ঞরা এমন দাবি করেছেন। বিবিসি জানিয়েছে, মহাপ্রাচীরের দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য এবারই প্রথম এমন পুড়খানুপুড়খ জরিপ চালানো হয়েছে।
আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। ‘ইনফ্রারেড’ ও ‘জিপিএস’ প্রযুক্তি ব্যবহার করার ফলে প্রাচীরটির অনেক লুকানো অংশ খুঁজে পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। এসব অংশ ধূলিঝড়, জলোচ্ছ্বাসহ নানা কারণে মাটির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাচীরের নতুন আবি®কৃত অংশ মিং রাজতে¦র সময় নির্মাণ করা হয়েছে।
চীনের উত্তরাঞ্চলকে শত্র“র আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য খ্রিষ্টের জন্মেরও ৫০০ বছর আগে এ প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এরপর প্রায় দুই হাজার বছর ধরে চীনের বিভিন্ন রাজতে¦র সময় এ প্রাচীরটি দৈর্ঘ্য বাড়ানো হয়েছে। ধারণা করা হয়, ১৬ শতকে সর্বশেষ এ প্রাচীর নির্মাণের কাজ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য টানা পাথরের দেয়াল গড়া হলেও দুর্গম এলাকাগুলোয় নদী ও উঁচু পর্বতকে প্রাচীরের অংশ হিসেবেই ব্যবহার করা হয়েছে। এমন নদী বা পাহাড়ের দুই পাশেই রয়েছে প্রাচীর। বিশেষজ্ঞরা এমন নদী বা পর্বতকেও মহাপ্রাচীরের অংশ হিসেবে গণ্য করেন। চীনের রাষ্ট্রীয় এ জরিপে দেখা যায়, মহাপ্রাচীরে ছয় হাজার ২৫৯ কিলোমিটার দেয়াল ও ৩৫৯ কিলোমিটার পরিখা রয়েছে। এ ছাড়া প্রাচীরের বিভিন্ন অংশে মোট দুই হাজার ২৩২ কিলোমিটার এলাকায় পাহাড় ও নদীকে প্রাকৃতিক নিরাপত্তাবেষ্টনী হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
চীন জানিয়েছে, আরও দেড় বছর ধরে মহাপ্রাচীরের দৈর্ঘ্য মাপার এ জরিপ চলবে। বিবিসি।
Posts
0 comments:
Post a Comment